ডেস্ক রিপোর্ট: মিয়ানমারে ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে কাজ করার জন্য তালিকাভুক্ত করার পর রাখাইন রাজ্যের কিয়াউকফিউ শহরের কিয়াউক তা লোন আইডিপি বা আভ্যন্তরীণ ভাবে বাস্তুচ্যুতদের ক্যাম্পে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছে মুসলিম যুবকরা অনেকে আবার আরাকান আর্মির কাছে আশ্রয় চাচ্ছেন।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র রাখাইনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নারিঞ্জারা নিউজকে জানিয়েছে, ১০ রোহিঙ্গা যুবকের সঙ্গে একজন তরুণী আশ্রয় শিবির থেকে পালিয়ে
আরাকান আর্মির কাছে আশ্রয় চেয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি (আইডিপি) জানান, যারা আশ্রয় শিবির থেকে পালিয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্যাম্পে থাকার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। ক্যাম্পের কর্মকর্তারা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি জানান, ক্যাম্পের লোকেরা মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আতঙ্কিত। তারা এখানে পড়ে আছে কারণ তাদের পালানোর কোন জায়গা নেই। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই এখানে উদ্বিগ্ন, তারা খাওয়া-দাওয়া করতে পারছে না। প্রায় ১৫-১৬ জন যুবক ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গেছে এবং তাদের পরিবারের বাকি সদস্যদের ক্যাম্প থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সব কিছুই হারিয়েছি, জানিনা এখন কী করব।
জান্তা কিয়াউকফিউ টাউনশিপের কিয়াউক তা লোন মুসলিম ক্যাম্প থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী পুরুষদের একটি তালিকা করেছে যদিও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দেওয়ার কথা। তারপরও জোরপূর্বক ১৫০ জনকে সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে ক্যাম্প কর্মকর্তারা।
ক্যাম্পের মুসলিম অধিবাসীরা জানান, তালিকায় নাম ওঠা ১৫০ জনকে সাত দিনের মধ্যে মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জান্তা। তবে শবে বরাতের কারণে এই সময়সীমা আরও তিন দিন বাড়ানো হয়।
জান্তা তাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আর মিলিটারি সার্ভিসে যোগ না দিলে তাদের গ্রেপ্তার করার হুমকি দেওয়া হয়।
ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা অধিবাসী বলেন, আমি নিশ্চিত নই তিনি একজন অপারেশন কমান্ডার নাকি ক্যাপ্টেন ছিলেন; আমাদের বলেছেন একটি জাতিগোষ্ঠী হিসেবে, আমরা দেশের সেবা করতে বাধ্য। আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করেছি, তাহলে আমাদের কেন নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি? তখন তিনি সামরিক প্রশিক্ষণের পর নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি জানান জান্তা এখন রাখাইনদের চেয়ে রোহিঙ্গাদের বেশি বিশ্বাস করে।
সংশ্লিষ্ট আশ্রয় শিবিরটিতে ৩০০টি পরিবারের ১ হাজার জনেরও বেশি লোক বসবাস করছে। ২০১২ সালের সংঘাতের পর কিয়াউকফিউ শহরের আহ ইয়ার শি, পাইক সেক, তান বান চাউং এবং টো চেয়ের মতো এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে তারা এখানে এসেছিল।